পুজো নিয়ে গল্পকথা
সোনারোদে হাসছে আকাশ, বাদল মেঘের ছুটি
পুজোর মাঠে ছোটোরা সব করছে হুটোপুটি।
ঝিনুক-তাতান এবার পুজোয় নেয়নি নতুন জামা
পুজোর বোনাস বন্যাত্রাণে দিয়ে এলেন মামা।
‘বসে আঁকো’য় আঁকলো তাতান দুর্গামায়ের মুখ
দুই চোখে তার অভয়বাণী, ত্রিনয়নে সুখ !!
ছোট্ট বন্ধুরা
নিশ্চয়ই দারুণ মজায় কাটালে তোমরা পুজোর দিনগুলো! সকলেই নিশ্চয়ই নতুন জামা-জুতো পরে ঠাকুর দেখতে গিয়েছিলে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে। দুর্গাপুজো শেষ হলেই আসবে কালীপুজো। তারও তো কত জমজমাট আয়োজন। এখন তো স্কুলও ছুটি তোমাদের। খুব আনন্দ করো তোমরা। আর তারই ফাঁকে ফাঁকে এসো তোমাদের জানাই পুজো নিয়ে কিছু গল্পকথা।
দুর্গাপূজার সূচনা প্রাচীনকাল থেকে হলেও, পরবর্তীকালে বাংলার নবাবদের আমলে রাজকীয়ভাবে শুরু হয়। ১৮ শতকে কলকাতার জমিদার পরিবারগুলো দুর্গাপূজাকে বড় আকারে উদযাপন করা শুরু করে, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও বড়ো আকার ধারণ করে। জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার পর এলাকাভিত্তিক উদ্যোগে দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হয়। মূলত পাড়ার ক্লাব বা সংগঠন মিলে আয়োজন করে পুজো, যাকে আমরা বলি সর্বজনীন দুর্গোৎসব।
পূজার সময় কলকাতা এবং অন্যান্য গ্রাম-শহরে পূজা মন্ডপগুলি অপরূপ আলোকসজ্জায় সাজিয়ে তোলা হয়। মণ্ডপগুলো নানা থিমে সাজানো হয়–কখনও ঐতিহাসিক স্থাপনার আদলে, কখনও আধুনিক শিল্পকলার প্রতিফলন হিসেবে। কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীরা বড় যত্নে তৈরি করেন দুর্গা, কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী এবং সরস্বতীর প্রতিমা। প্রতিমা তৈরির ক্ষেত্রে বাংলার পুরাণ ও সাহিত্যের আশ্রয় নেওয়া হয়।
দুর্গা পূজা কেবলমাত্র ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান নয়, এটি বাঙালির সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও এক বৃহৎ সামাজিক অনুষ্ঠান। বাংলার প্রতিটি কোণে তো বটেই, বিশ্বের সর্বত্র যেখানেই বাঙালি বাস করে সেখানে এই পূজা উদযাপিত হয় মহাসমারোহে। ধর্ম, জাতি, বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষ সমানভাবে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয় এই উৎসবে।
পুজো উদযাপনের পাশাপাশি আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করব দু’জন মহান ভারতীয়কে, যাঁরা জন্মগ্রহণ করেছিলেন এই অক্টোবর মাসে। দুজনেরই অসীম অবদান ভারতবাসীর জীবনে। দুজনেরই জন্ম হয় ২রা অক্টোবর–একজন দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতিভূ মহাত্মা গান্ধী ( সাল ১৮৬৯), আর একজন ভারতের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী (সাল ১৯০৪)।
***ছবি ঋণ ইন্টারনেট
পাঠকদের মন্তব্য
250