নতুন বছর নতুন দিন
ফিরে এলো নতুন বছর
নতুন স্বপ্ন আর আশা-ভরসায়
শুরু হলো নতুন সফর !!
তোমরা নিশ্চয়ই জানো আগামী ১৫ই এপ্রিল পয়লা বৈশাখ, বাংলার নববর্ষ (১৪৩২ বঙ্গাব্দ)। রঙে-রসে ভরা বসন্ত ঋতু বিদায় নিতেই প্রকৃতির আঙিনা জুড়ে কালবৈশাখীর আগমন বার্তা শোনা যায়। এরই সঙ্গে বাঙালির ঘরে ঘরে শুরু হয়ে যায় নতুন বাংলা বছরকে আবাহনের আয়োজন।
বাংলা বছরের শেষ মাস চৈত্রের শেষ দিনটিকে বলা হয় চৈত্র সংক্রান্তি। অর্থাৎ পরের দিনটিই পয়লা বৈশাখ। বছরের শেষ দিন হিসেবে পুরাতনকে বিদায় ও নববর্ষকে বরণ করার জন্য প্রতিবছর চৈত্র সংক্রান্তিকে ঘিরে আয়োজিত হয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান। গ্রামগঞ্জে নানা ধরনের মেলা ও উৎসব হয়। লাঠি খেলা, পালা গান, সং যাত্রা, রায়বেশে নৃত্য, শোভাযাত্রাসহ নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয় চৈত্র সংক্রান্তি।
ঠিক পরের দিনটি বাঙালির বড় আপন, বড় আনন্দের, পয়লা বৈশাখের নতুন ভোর। সব মলিনতা মুছে ফেলে নতুন পোশাক পরে বাঙালিরা মিলিত হয় পয়লা বৈশাখের সর্বজনীন উৎসবে। অন্ধকারকে বিদায় জানিয়ে আলোর পথে এগিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার। পয়লা বৈশাখের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান প্রভাত ফেরি বা ভোরের শোভাযাত্রা। এছাড়া পাড়ায় পাড়ায় আয়োজিত হয় বর্ণময় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ।
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে বাঙালি মেতে ওঠে নববর্ষ উদযাপনে। শহরে ততখানি না হলেও আজও বাংলার গ্রামগঞ্জে এইদিন আলপনায় সেজে ওঠে বাড়িঘর। আলপনার নকশার কেন্দ্রে কলস স্থাপন করা হয়, সকলেরই বিশ্বাস এটি সমৃদ্ধির প্রতীক। গ্রামে ও শহরে পুজোর আয়োজনে ঘট বসানো হয়, তার ওপর থাকে ডাব ও আমের পল্লব। ঘটের গায়ে আঁকা হয় স্বস্তিক চিহ্ন।
দোকানী ও ব্যবসায়ীরা বাংলা নববর্ষের আগমন উপলক্ষে হালখাতা অনুষ্ঠান পালন করেন। সমস্ত দোকান ফুল ও সন্ধ্যায় আলোর মালায় সাজানো হয়। দোকানদার এবং ব্যবসায়ীরা পুরাতন হিসাবের খাতা বন্ধ করে নতুন হিসাবের খাতা খোলেন। ক্রেতা ও গ্রাহকগণ তাঁদের পরিচিত দোকানে যান আগামী বছরের জন্য শুভকামনা জানাতে। ব্যবসায়ীরা এই দিনে গ্রাহকদের মিষ্টি দিয়ে স্বাগত জানান।
নতুন বছরের প্রথম দিনটি হোক শপথ নেবার। মন দিয়ে লেখাপড়া শুধু নয়, যা শিখছ বা শিখবে তা বাস্তবে কাজে লাগাতে হবে। তারজন্য নিজের শরীর ও মনকে সুস্থ রাখতে হবে। শরীর ও মন সুস্থ রাখার জন্য খেলাধুলো, সংস্কৃতি-চর্চা, সিলেবাসের বাইরের বই পড়া ইত্যাদি ছাড়াও আমাদের পরিবেশকে ঠিক রাখার চেষ্টা করতে হবে। তারজন্য অনেক গাছ লাগাতে হবে এবং গাছের যত্ন করতে হবে। শুধু মানুষ নয়, গাছপালা, পশুপাখি সবাই প্রকৃতির সম্পদ। সবাইকে ভালোবাসতে হবে।
ছবি ঋণ ইন্টারনেট
পাঠকদের মন্তব্য
250