বন্ধুর নাম টিয়া
মৃণালিনী ঠাকুর
স্কুল থেকে ফিরেই দৌড়ে দাদুর ঘরে যায় টিয়া। ব্যাগ ইত্যাদি নিয়ে পিছনে হাঁপাতে হাঁপাতে কমলা। ব্যাগপত্র কোনোমতে টিয়ার পড়ার ঘরে রেখে, কমলা এসে দাঁড়ায় সুধাবিন্দুর ঘরের দরজায়। ততক্ষণে টিয়ার বকবকানি শুরু হয়ে গেছে।
আচ্ছা, দাদুর সঙ্গে পরে কথা বোলো টিয়া। আগে হাত পা ধুয়ে কিছু খেয়ে নেবে চলো।
কমলার এই কথায় প্রবলভাবে ঘাড় নেড়ে প্রায় চোখ পাকিয়ে টিয়া বলে–যাচ্ছি কমলা পিসি। এট্টু দাঁড়াও। দাদানকে আমার নতুন বন্ধুর কথাটা বলে নিই। বলেই–জানো দাদান, আমাদের ক্লাসে না একটা নতুন ছেলে এসেছে, নাম খড়্গ তামাং। ওর বাড়ি কোথায় জানো, অনেক দূর, সেই মংপুতে। মংপু কোথায় গো দাদান ? আর জানো, ওর চোখগুলো না এই ছোট্ট ছোট্ট, বলে হাত নিজের চোখের পাশের চামড়া টেনে মাপ দেখায় টিয়া। তারপরই হাসতে হাসতে–কিঞ্জল বলে, অমন খুদে খুদে চোখ, ও কী আর আমাদের মতো সবকিছু দেখতে পায় ?
সুধাবিন্দু হাতের বইখানা পাশের টেবিলে নামিয়ে রাখেন। তারপর বলেন, এভাবে বলতে নেই দিদি। আচ্ছা, সব কথা হবে। আগে কমলা পিসি কী বলছে, শুনে এসো।
অগত্যা…! কমলার পিছু পিছু ঘরে গিয়ে স্কুল ইউনিফর্ম ছাড়ে টিয়া !! ফ্রেশ হয়ে টুকটাক খেয়ে আবার সে ছোটে দাদানের ঘরে। কমলা হাসে। সে এ বাড়ির পুরোনো পরিচারিকা। টিয়ার বাবা কর্মসূত্রে ভিন রাজ্যে। মা বৈশালী এই শহরেই নিজের নার্সারি চালায়। বাড়ির গিন্নি অর্থাৎ সুধাবিন্দুর স্ত্রী গত হয়েছেন বহুকাল। রোজ সকালে রান্নার পাট চুকিয়ে স্নান ও ব্রেকফাস্ট সেরে নার্সারিতে যায় বৈশালী। তারও আগে স্কুলবাসে টিয়াকে তুলে দিয়ে আসেন সুধাবিন্দু। টিয়াকে স্কুল থেকে আনা ও ফেরার পর তার দেখভালের দায়িত্ব কমলার। এখন বেশ খানিকটা সময় টিয়া দাদুর কাছে বকবক করবে। এই অবকাশে দ্রুত বাড়িঘর সাফ করবে, রান্নাঘরেও কিছু কাজ আছে, সেরে নেবে সে।
তাহলে টিয়ারানি, খড়্গ হলো তোমার নতুন বন্ধু।
বন্ধু এখনও হয়নি দাদান। ও তো আমাদের কথা বুঝতেই পারে না। আমরাও ওর কথা বুঝি না। নীলা আন্টি বলেছে, ও নাকি পাহাড়ের ছেলে। ওরা নেপালি ভাষায় কথা বলে। সেটা কী দাদান ?
এই যেমন আমরা বাঙালি, বাংলায় কথা বলি। তোমাদের খড়্গ হলো নেপালি, নেপালি ভাষায় কথা বলে। তবে, তোমাদের সঙ্গে থাকতে থাকতে ও নিশ্চয়ই বাংলা ভাষা শিখে যাবে একটু একটু করে। আচ্ছা তুমি মংপুর কথা জানতে চাইছিলে না ? জানো তো, সেখানেও রবি ঠাকুরের একটি বাড়ি রয়েছে। প্রকৃতিপ্রেমী কবিগুরু যেমন আমাদের এই বোলপুরেই গড়ে তুলেছেন শান্তিনিকেতন। এখানকার প্রকৃতি তাঁর বড় প্রিয় ছিল।
সে তো জানি ! তুমি মংপুর কথা বলো।
মংপু হলো কালিম্পং জেলার ছোট এক পাহাড়ী শহর।
কালিম্পং ? সেটা আবার কোথায় দাদান ?
সে হলো উত্তরবঙ্গে। আমাদের এই বাংলারই উত্তরের অংশ উত্তরবঙ্গ, কালিম্পং সেখানেই। পুরো একটা রাত ট্রেনে, তারপর অনেকটা পথ গাড়িতে গিয়ে পৌঁছতে হয় কালিম্পং, যার মধ্যেই রয়েছে মংপু, অর্থাৎ তোমাদের খড়্গর বাড়ি।
কয়েকটা দিন কেটে যায়। এরমধ্যে সদ্য জ্ঞানপ্রাপ্ত টিয়া তার মাকে রাতে বিছানায় শুয়ে খড়্গ, তার বাড়ি মংপু, সঙ্গে কালিম্পং সম্পর্কে বিস্তারিত জানায়। মংপুতে যে এই বোলপুরের শান্তিনিকেতনের মতোই রবি ঠাকুরের একটা বাড়ি আছে, সেটিও জানাতে ভোলে না সে! বৈশালী ভাবে, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল হলেও, নিজেদের মধ্যে তো বাংলা ভাষাতেই কথা বলে ওরা। সেটাই স্বাভাবিক। তবে, তারই মধ্যে মাঝে মাঝে ব্যতিক্রম ঘটে যায়, যখন ভিন রাজ্য বা রাজ্যেরই অন্য অঞ্চল থেকে বাচ্চারা এখানে আসে। খড়্গ গুরুংয়ের ব্যাপারটাও তেমনই হবে। শুরুতে সমস্যা হলেও, বাকিদের মতোই পরে সেও নিশ্চয়ই মিশে যাবে অন্যদের সঙ্গে। বাংলা ভাষাও শিখে যাবে।
কোপাই নদী থেকে কিছুটা দূরে শান্তিনিকেতনের আশ্রমিক পরিবেশের অনুপ্রেরণায় একদা এই জুনিয়র হাইস্কুল প্রতিষ্ঠা করেন সুধাবিন্দু ও তাঁর আরও কয়েকজন বন্ধু। তাঁদের সকলেরই চাকরি জীবন কেটেছে বিশ্বভারতীর ছত্রছায়ায়। তখন থেকেই তাঁরা স্বপ্ন দেখেন এমন একটি স্কুল গড়ে তুলবেন, চাকরি থেকে অবসরের পর। আপাতত ক্লাস সিক্স পর্যন্ত পড়া চালু। এলাকার বাচ্চারাই পড়ে। তবে, প্রতি বছরই সেখানে এক-দুজন করে ভিন রাজ্য বা ভিনদেশের বাচ্চা ভর্তি হয়। মূলত এদের বাবা-মায়েদের কর্মসূত্রেই বোলপুরে এই পরিবারগুলির আগমন।
কী হলো টিয়ারানি ? মুখ গোমড়া কেন তোমার ? কার ওপর আবার রাগ হলো তোমার ?
ওই যে ওই বড় ক্লাসের দাদারা…কমলার প্রশ্নের জবাবে কথা অসমাপ্ত রেখে থেমে যায় টিয়া। কমলা পিসিকে বললে, এখনই মাকে বলবে। তারপর নানা ঝামেলা। সে বরং দাদানকে বলবে। ভয়ে ভয়ে পিছনে তাকায় টিয়া। ছেলের দলটির একজন বিট্টুদাদা–এখন ঠিক তাদের পিছনে। তাদের বাড়ি থেকে একটু দূরেই বিট্টুদাদের বাড়ি। সুযোগ পেলেই তাকে ‘টিয়া টিয়া টিয়া… ট্যারা চোখে তাকায়…’ বলে খেপায় বিট্টুদাদা। সে যাই হোক, খড়গ আসার পর বিট্টুদাদা আর ওদের দলবল যা করছে, সেটা মোটেও ভালো নয় !! ওরা জোর করে ওর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে। খড়গ ওদের কথা বোঝে না, ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে আর তাই নিয়ে মজা করে দলটা। সবশেষে মাথায় চাটি মেরে চলে যায়।
আজ রবিবার। বৈশালীর নার্সারি বন্ধ। অন্যদিন যেমন-তেমন, ছুটির দিন সকালের চা-টা সুধাবিন্দুর ঘরে নিজেই নিয়ে যায় বৈশালী। যথারীতি সেখানে হাজির টিয়া এবং তার নানা প্রশ্নের মুখে টিয়ার দাদান।
কী ব্যাপার, কী নিয়ে এত দরবার ?
ওই যে ওদের স্কুলের পিকনিক আগামী রবিবার। এবার নাকি কোপাইয়ের ধারে নিয়ে যাওয়া হবে ওদের–বৈশালীর প্রশ্নের জবাবে জানান সুধাবিন্দু।
জায়গাটা কী সেফ বাবা ? এতগুলো বাচ্চা !
না না, চিন্তা কোরো না। খোলা জায়গায় নয়। একটা নাকি পাঁচিল ঘেরা বাগানবাড়ি হয়েছে ওখানে। কমিটি মিটিংয়ে আমরাও প্রথমে সেফটির প্রশ্ন তুলেছিলাম। গেম টিচার সুহাস বাগানবাড়িটা সম্পর্কে বিস্তারিত বলল। শুনলাম, শুধু পাঁচিল ঘেরা নয়, গার্ডও আছে।
জানো মা, নীলা ম্যাডাম বলল, ভেতরে কত গাছপালা, অনেক ফুল আর একটা চিড়িয়াখানাও নাকি আছে, সেখানে খরগোশ, কাঠবেড়ালি, হরিণ আছে। আর গাছে গাছে অনেক পাখি–মহা উৎসাহে বলে ওঠে টিয়া।
টিয়ার কথায় কান না দিয়ে বৈশালী বলে, বলছিলাম কী বাবা, টেনশন কিন্তু থাকবে।
টেনশন কোরো না মা। স্কুলের টিচাররা সবাই থাকবেন। এছাড়া একটি সিকিউরিটি এজেন্সিকেও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এমনকী একজন ডাক্তারও থাকবেন শুনেছি–বললেন সুধাবিন্দু।
মাঝের ক’টা দিন টিয়ার উত্তেজনা উঠল চরমে। পিকনিকে গিয়ে সে কী কী করবে, শুনতে শুনতে সকলের কান একেবারে ঝালাপালা। কমলা বলে, বাপ রে, পিকনিক শেষ হলে বাঁচি। সুধাবিন্দু হাসেন। বৈশালী চুপচাপ। শ্বশুরমশাই যতই বলুন, তার টেনশন যায় না।
অবশেষে দিনটা এসে গেল। সকাল সকাল তৈরি হয়ে, মা আর সুধাবিন্দুকে তাড়া দিয়ে বেরিয়ে পড়ে আমাদের টিয়ারানি। ওরা অবশ্য স্কুল পর্যন্তই যাবেন। তারপর টিয়া স্কুলের টিচারদের তত্ত্বাবধানে। কমলাকে বাই বাই করে মায়ের সঙ্গে রিকশায় ওঠে টিয়া। আর এক রিকশায় সুধাবিন্দু।
টিয়াকে পৌঁছে দিয়ে বাড়ি ফেরার পর গৃহকর্মে ব্যস্ত হয়ে পড়ে বৈশালী। ছুটির দিনটায় সে আর কমলা মিলে সারা সপ্তাহের পেন্ডিং কাজকর্ম মেটায়। সুধাবিন্দু চলে যান নিজের ঘরে। আজ ঠান্ডাটা জব্বর পড়েছে। পোশাক বদলে বারান্দায় গিয়ে বসেন তিনি। রোদটা এইসময় বেশ আরামদায়ক লাগে!
বাগানবাড়ির ভিতরে, বেশ খানিকটা পিছন দিকে একটি দোতলা বাড়ি তার ওপরের তলায় কয়েকটি ঘর। সেখানে সোফা ইত্যাদি সহকারে বসার ব্যাবস্থা। নিচতলার পুরোটাই একটা হল, সেখানেই খাওয়ার টেবিল চেয়ারের বন্দোবস্ত রয়েছে। বাইরে বাগানের মধ্যেও অবশ্য খাবারের আয়োজন রয়েছে। তবে, বাচ্চাদের নিয়ে ব্যাপার, তাই টিচাররা রিস্ক নেননি, ভিতরেই খাবারের বন্দোবস্ত করেছেন। লাঞ্চের সময় প্রথম চোখে পড়ে, সংখ্যায় দুজন বাচ্চা কম–টিয়া এবং খড়গ। সঙ্গে সঙ্গে তৎপর স্কুলের দু তিনজন টিচার এবং সিকিউরিটি এজেন্টের লোকেরা। বাকিরা অন্য বাচ্চাদের খাওয়া পর্ব চুকিয়ে ফেলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। হেডমিস্ট্রেস রত্না বোস তাড়াতাড়ি ফোন করেন খড়্গ আর টিয়ার বাড়িতে।
গার্ডরা জানায়, বাড়ির গেট শুরু থেকেই বন্ধ ছিল। তাই ওদের বাইরে যাবার প্রশ্নই নেই। অতএব ভিতরেই খুঁজতে হবে। তন্ন তন্ন করে খুঁজতে খুঁজতে শেষে দলটা এসে পৌঁছয় বাড়ির পিছনের পাম্পঘরের সামনে। ঘরের ভিতর থেকে কচি গলার কান্না শুনে সন্দেহ হতেই সুহাস ছুটে গিয়ে দরজা খোলে, ততক্ষণে ভিতরে অন্ধকারে প্রায় অজ্ঞান হয়ে পড়েছে খড়্গ, আর টিয়া কেঁদে কেঁদে তাকে কথা বলাবার চেষ্টা করছে। ধরাধরি করে প্রথমে বাইরে, তারপর ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় ওদের। কীভাবে এমনটা ঘটল, এখন জানার উপায় নেই। সবার আগে ওদের সুস্থ করে তুলতে হবে।
এদিকে ফোন পেয়েই পিকনিক স্পটে ছোটে বৈশালী–সুধাবিন্দু, কমলাকে হতবাক করে। নির্দিষ্ট ঘরটিতে পৌঁছতে বেশ খানিকটা দেরি হয় বৈশালীর। প্রচুর ভিড় সেখানে–টিচাররা রয়েছেন আর বাচ্চাদের হাত ধরে দাঁড়ানো গার্জিয়ান। ততক্ষণে বৈশালীর বুকের ধুকপুকানি চরমে উঠেছে। ঢুকেই প্রথম তার চোখ যায় সেইদিকে, যেখানে একটি চেয়ারে বসে টিয়া, পাশের বেডের চোখ বুজে শুয়ে থাকা বাচ্চাটি সম্ভবত খড়্গ হবে। টিয়ার মুখ শুকিয়ে আমসি। হেডমিস্ট্রেস রত্না বোস এগিয়ে আসেন, হাত ধরে আর একটি চেয়ারে বসিয়ে দেন বৈশালীকে–বসুন। আর চিন্তা নেই। এখন সব আন্ডার কন্ট্রোল। এরপরই তিনি গেম টিচার সুহাসকে বলেন, সব স্কুলবাস রেডি আছে। এখনই সমস্ত স্টুডেন্ট ও গার্জিয়ানকে বাড়ি যেতে বলো। গেম টিচার বেরিয়ে যান। এবার পুরো ঘটনা জানান তিনি বৈশালীকে। শুনে স্বভাবতই স্তম্ভিত ও আতঙ্কিত হয়ে পড়ে বৈশালী। ইতিমধ্যে খবর পেয়ে এসে গেছেন সুধাবিন্দুও। হেডমিস্ট্রেস জানান, টিয়াকে বাড়ি নিয়ে যেতে পারেন ওঁরা।
কেটে গেছে কয়েকটা দিন। এরমধ্যে পুরো কান্ডের ভিতরের কথা জানা হয়ে গেছে সবারই। পাম্পঘরের সামনে বিট্টুরাই টেনে নিয়ে যায় খড়্গকে। টিয়া সেটা দেখতে পেয়ে ওদের পিছন পিছন যায়। বরাবরের মতোই খড়্গকে বিরক্ত করছিল ওরা। টিয়া ক্লাসটিচার নীলা ম্যামকে নালিশ করবে বলতেই ওরা টিয়া আর খড়্গকে ওই অন্ধকার ঘরে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ দুষ্টু ছেলেদের বিরুদ্ধে কী ব্যাবস্থা নেয়, সেটা নিয়ে আপাতত মাথা ঘামাচ্ছে না কেউ। টিয়া আর খড়্গর ট্রমা কাটিয়ে ওঠাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এখন। এরই মধ্যে অবশ্য বিট্টুর বাবা-মা এসে একপ্রস্থ ক্ষমা চেয়ে গেছেন।
ঘটনার পর এখনও স্কুলে যায়নি টিয়া। আজ প্রায় সাতদিন পর নার্সারিতে গেছে বৈশালী। বিকেল হয়েছে।
সুধাবিন্দু বারান্দায় বসে, তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে টিয়া। তার মুখ বিষন্ন।
দাদান খড়্গ কী মংপুতে চলে যাবে গো ? পিকনিকের দিন ওর মা বলছিল।
না দিদি, সেটা কী হতে দেওয়া যায় ? ওর পড়ার ক্ষতি হয়ে যাবে যে তাহলে। আমি কালই ওদের বাড়ি যাব, বুঝিয়ে বলব খড়্গর বাবাকে। তোমাদের বড় দিদিমনি আর সুহাস স্যর আজ গিয়েছিলেন। ওঁরাও খড়্গর বাবা-মাকে বুঝিয়েছেন। তুমি মন খারাপ করো না। আমাদের শান্তিনিকেতন থেকে তোমার বন্ধু খড়্গকে যেতে দেব না আমরা।
পাঠকদের মন্তব্য
250