ছোটোদের চাঁদের হাসি / ছড়া - কবিতা / মার্চ ২০২৫

ছড়া-কবিতা

দোলের দিনে

কাজী মুরশিদুল আরেফিন

 

সকাল থেকে রঙের খুশি

সবুজ লালে নীলে,

দিনটা রঙে রঙিন হবে

দরজা খুলে দিলে।

 

কবি গুরুর গানের সুরে

আবীর নিয়ে হাতে

ছোট্ট রিমি রিতুল রানা

আনন্দে খুব মাতে।

 

সিরাজ কোথায় ইভানা আয়

কোকিল গানের শুরু,

দোল-দোলানো ফাগুন এলেই

রঙের খেলা শুরু।

 

সাতটি রঙের মজার আসর

উঠোনখানা জুড়ে,

চুপটি ক’রে দেখছে পুষি

টিয়াও এল উড়ে।

 

নাচে-গানে জমজমাটি

মন খুশিতে দোলে,

রঙের খেলার পরে গজা

কেউ কি খেতে ভোলে।

 

 

 

রঙ মেখে নাও

শ্যামাচরণ কর্মকার

 

দেখেছ কেমন আকাশ মেখেছে নীল

রোদ্দুর মাখে সোনালি, রুপোলি আলো

পাখনায় রঙ মেখে নিয়ে ওড়ে চিল

রঙের ছোঁয়ায় খুশির প্রদীপ জ্বালো।

 

ওই দেখো ওই পলাশ ভরেছে লালে

অশোক, শিমুল, কৃষ্ণচূড়াও রাঙা

বসন্ত এলে আবিরের ছোঁয়া গালে

হোলির রঙেতে রঙিন ভুবনডাঙা।

 

পথ-ঘাট-মাঠ-গাছ-পাতা-ফুল-ঘাস

সবার কেমন রঙমাখা রূপ, সাজ

বসন্ত মানে রঙ ভরা চারপাশ

সাজছে ফাগুন রঙিন হচ্ছে আজ।

 

চেয়ে দেখো ওই রঙ মাখে পিচকারি

দেখো চেয়ে সব সব্বাই রঙ মাখে

রাঙিয়ে নিচ্ছে নিজেকে পুরুষ, নারী

রঙের দিনে কে রঙ ফেলে দূরে থাকে?

 

ঘেরাটোপ ছেড়ে বাইরে এসো তো সব

রঙ মেখে নাও রাঙা হোক মন-প্রাণ

রঙ মাখা মানে মিলনের উৎসব

রঙ মাখা মানে বিভেদের অবসান।

 

 

 

অবাক আঁকন

শংকর নাইয়া

 

খুকু যখন আঁকল আকাশ

ফুটল সকল তারা

মেঘবালিকা ভেসে ভেসে

হল মাতোয়ারা।

হাসল চাঁদের বুড়ি,

সেই খুশিতে ফুটল খুকুর

মনেরই ফুলকুঁড়ি। 

 

খুকু যখন আঁকল হাসি

ধানের নোওয়া শিষে

উঠল গেয়ে বাউল বাতাস

তার শরীরে মিশে।

ফুটল ঝিলিক আলো,

খুকু তখন সেই আলোতে

মুছল আঁধার-কালো।

 

খুকু যখন আঁকল শিশির

সবুজ নরম ঘাসে

শিশির মেখে নাচবে বলে

ফড়িং ছুটে আসে।

ঘাসের ঠোঁটে হাসি,

খুকু তাতে দেয় উড়িয়ে

ভোরের স্বপ্নরাশি।

 

খুকু যখন আঁকল নদী

পাশে কুমোর পাড়া

দুঃখ সুখে দুকূল ছেপে

বইছে জলধারা।

নৌকা এসে মেশে,

খুকুর মনের দুঃখগুলি

স্রোতেই গেল ভেসে।

 

 

 

ফুলের আঁকিবুকি

দীপঙ্কর গোস্বামী

 

শালের বনে ফুল ফুটেছে

গান ধরেছে পাখি,

দখিন হাওয়া ডাক দিয়েছে—

দেখতে যাবি নাকি?

গাব, গামারি, কুরচি ফুল

গাছ ভরে আছে ছেয়ে,

আনন্দে সব উঠবে মেতে

তোদের কাছে পেয়ে।

অশোক, পলাশ, শিমুলবনও

চারদিকে এর মাঝে,

ফুল সাজিয়ে দাঁড়িয়ে আছে

মনমাতানো সাজে।

মহুয়া, আর কৃষ্ণচূড়া—

যায় না কেউই কম;

সঙ্গে আছে ক্যামেলিয়া

ফুলটি মনোরম।

ঝরাপাতা হাওয়ায় উড়ে

বলছে ভেসে ভেসে—

বনকে রঙিন করে দিল

বসন্তকাল এসে!

শুনে খোকা ছুট লাগাল,

ছুট লাগাল খুকি;

দেখল তারা বনটি জুড়ে

ফুলের আঁকিবুকি!

 

 

 

বায়না

তনুজা চক্রবর্তী

 

একফালি নয় এক থালা চাই

বায়নার নেই জুড়ি,

ঢাকবে না কেউ চাঁদটাকে আর

ওড়াবে না চুল বুড়ি।

 

আঁকবে না মেঘ আকাশের গায়

নিরুদ্দেশের ছবি,

বসবে না পাটে ফিরবে না ঘরে

সহজপাঠের রবি।

 

ঝরবে না ফুল চেনা আঙিনায়

গাইবে না গান পাখি,

শত দুঃখেও ভরবে না জলে

কোনোদিন কারও আঁখি।

 

গড়গড় করে বলেছিল যা যা

কেবল কথার ছলে,

অবুঝের ঠোঁটে কাঁচামিঠে জেদ

শৈশব কথা বলে।

 

 

 

সোনা মেয়ে

স্বাগতা ভট্টাচার্য

 

ফ্রক জামা লাল ফিতে,

কানে সোনার দুল।

খেলছে পুতুল কথা কওয়া,

সোনালী তার  চুল।

 

সোনা মেয়ের সোনার বরণ,

মিষ্টি স্বভাব তার।

ভাঙলে পুতুল অসাবধানে,

বকবে না কেউ আর।

 

নেই দেরি তার স্কুলে যেতে,

ফিরতে আবার ঘর।

পড়শি পাড়ায় সবাই আপন,

কোত্থাও নেই পর।

 

নামটি টুসি মিষ্টি হাসি,

চাঁদের মতো মুখ।

ওই মুখে চোখ পেতে মায়ের,

জগতজোড়া সুখ।


পাঠকদের মন্তব্য

Tanuja Chakraborty লিখেছেন... ০৯ই মার্চ, ২০২৫
ছড়ার পাতা সুন্দর সেজে উঠেছে।
চৈতন্য দাশ লিখেছেন... ১০ই মার্চ, ২০২৫
সব ছড়াগুলো পড়ে ফেললাম পুরনো বিষয় নিয়ে নতুন দর্শনে দারুণ ছড়া সব
ড: পার্থ প্রতিম বিশ্বাস লিখেছেন... ১১ই মার্চ, ২০২৫
শিশু মানেই ৬ -১০ বছর বয়সী বাচ্চাদের বুঝি । এদের আনন্দের ও খেলার মাধ্যমে শেখাতে হয় । এই শেখানো ছড়া বলার মাধ্যমে হলে খুব ভালো ।
উৎপলকুমার ধারা, লিখেছেন... ১৪ই মার্চ, ২০২৫
এই সংখ্যার ছড়ার পাতা টি তে বেশ কিছু অতি উন্নতমানের ছড়া পেলাম, নীতিশ দার গল্পটিও মন্দ লাগলো না। এভাবেই ছোটদের চাঁদের হাসি এগিয়ে চলুক, সঙ্গে ছিলাম সঙ্গে আছি সঙ্গে থাকবো।
অমিত চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন... ২৮শে মার্চ, ২০২৫
সবক'টা ছড়াই পড়ে ফেললাম সব ছড়াই শিশু উপযোগী এবং সুনির্বাচিত।

আপনি কি এই লেখায় আপনার মন্তব্য দিতে চান? তাহলে নিচে প্রদেয় ফর্মটিতে আপনার নাম, ই-মেইল ও আপনার মন্তব্য লিখে আমাদের পাঠিয়ে দিন।
নাম
ই-মেইল
মন্তব্য

250

    keyboard_arrow_up