ছোটোদের চাঁদের হাসি / ছড়া - কবিতা / জুন ২০২৫

ছড়া-কবিতা

নজরুল নজরুল

ছন্দা চট্টোপাধ্যায়

 

ভোরের হাওয়ায় ঘুম ভাঙিয়ে

বনের পাখির গান শুনিয়ে

গুলবাগিচায় স্বপ্ন বুনে

        কে ফোটালো ফুল!

         নজরুল নজরুল!

 

জোছনা-ধোয়া চাঁদনি রাতে

দিনবদলের গান শোনাতে

কার ছোঁয়াতে উঠল জেগে

             তরতাজা মুকুল!

             নজরুল নজরুল!

 

পদ্মা নদীর ঢেউ-এর দোলায়

গঙ্গা মায়ের বুক ভেসে যায়

পানসি বেয়ে গজল গেয়ে

               কে ভরালো কূল!

               নজরুল নজরুল!

 

কোন মুসাফির অগ্নিবাণে

ধর্মধ্বজায় আঘাত হানে

মানবতার রঙিন সুতোয়

               গাঁথলো দুটি ফুল!

               নজরুল নজরুল!!

 

  

সুরের ছেলে 

উৎপলকুমার ধারা

 

গহিন রাতে সুরের ছেলে বাজিয়ে খুশির বাঁশি

দেয় এঁকে তার গ্রামটি জুড়ে জ্যোৎস্নার বানভাসি

মেঘমুলুকে  আঁকতে পারে চাঁদের বুড়ির ঘর

লাগাম ছেঁড়া পক্ষীরাজের ছোটার তেপান্তর।

 

রাত পেরোলেই সুরের ছেলে একতারাটি বাজায়

ভোরের আলোয় বাউল সুরেই মনের কথা সাজায়

কেউ জানেনা কেউ বোঝেনা সে-সব কথার মানে

গাছ পাখি ফুল নদীর তুফান তার কথা সব জানে।

 

সুরের ছেলে যেই না ধরে স্বপ্ন দেখার গান

ঠিক তখনি সাতখানা রঙ দেয় ঢেলে আশমান

একতারাটির ছন্দে নদীর যে ঢেউগুলো নাচে

তারাই তো সব সুরের ছেলের বন্ধু হয়ে আছে!!

  

 

নজরুল

দীপ রায়

 

নজরুল নজরুল

বিদ্রোহী বীর,

নজরুল নজরুল

উন্নত শির।

 

নজরুল নজরুল

অকুতোভয়,

নজরুল নজরুল

সাম্যের জয়।

 

নজরুল নজরুল

মিলনের ধাম,

নজরুল নজরুল

ঐক্যের নাম।

 

নজরুল নজরুল

জোষ্ঠির ঝড়,

নজরুল নজরুল 

রইলে অমর!!

  

 

দুই কবির মাস

রতন কুমার নাথ

 

আধখানা মে রবীন্দ্রময়,

আধখানা নজরুল,

কবিতার ও গানের এ মাস

নেইকো তাতে ভুল।

আধখানা মে জোড়াসাঁকোর

আধেক চুরুলিয়ার,

একই সুরে দোলন জাগায়

বঙ্গদেশের হিয়ার।

আধখানা মে সঞ্চয়িতার

বাকিটা সঞ্চিতার।

দুজন কবিই অমূল্য দান

স্রষ্টা বিধাতার।

একই সাথে শুনিয়েছিলেন–

মানবতার গান,

দু'ই হৃদয়েই সমান ছিল

হিন্দু মুসলমান!!

 

 

হে রবীন্দ্রনাথ

মুকুল মাইতি

 

কোথায় তোমার নেই পরিচিতি

ওগো বিশ্বের কবি।

গানে ও গল্পে নৃত্যে নাটকে

সবখানে তব ছবি।

গান তো লিখেছ কয়েক শতক

সুরও দিয়েছ তাতে।

স্বরবিতানের স্বরলিপিগুলো

বানালে নিজের হাতে।

 

অফুরান গান দেদার কবিতা

বিশ্বে দিয়েছ ছড়ায়ে।

যুগ যুগ ধরে গেয়ে যাবে লোকে

যাবেনা কখনো ফুরায়ে।

যাকেই ছুঁয়েছ সোনা হয়ে গেছে

হয়ে গেছে দ্যুতিমান।

বিশ্বে তাদের মান বাড়িয়েছ

বাড়ালে দেশের মান।

 

কোথায় তোমার পড়েনি স্পর্শ

বলতে পার কী কবি?

চিরভাস্বর হয়েই রয়েছ

ওগো আমাদের রবি।

যুগে যুগে তুমি হয়ে অম্লান

রবে তুমি মহীয়ান।

বিশ্ব দুয়ারে তোমার কীর্তি

গাইবে তোমারই গান!!

 

 

সেই ছবিটা

শক্তিপদ পন্ডিত

 

সেই ছবিটা

সব মানুষের বুকের মাঝে

অন্ধকারে আলো দেখায় সকল কাজে।

 

সেই ছবিটা

ভাবলে মনে ছাতিম ফোটে

কোপাই নদীর বাঁকে ভোরের সূর্য ওঠে।

 

সেই ছবিটা

ঢাকলে বকুল, ছাতিম ফুলে

তাঁর সুরে গান শুনতে পাবে জানলা খুলে।

 

সেই ছবিটা

কাঁদিয়ে দেয় শ্রাবণ মাসে

বোশেখ পঁচিশ আসলে চোখে স্বপ্ন ভাসে।

 

সেই ছবিটা

জোব্বা গায়ে লম্বা দাড়ি

জন্ম যে তাঁর জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি।

 

সেই ছবিটা

জগৎ খ্যাত বিশ্বকবির

নোবেলজয়ী আলোর পথিক সোনার রবির!!


পাঠকদের মন্তব্য

শক্তিপদ পণ্ডিত লিখেছেন... ০৮ই জুন, ২০২৫
জুন ২০২৫ সংখ্যার প্রতিটি ছড়া কবিতা আমার খুবই ভালো লাগলো। আপনার লেখাটিও চমৎকার। অশেষ ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানাই।
তনুজা চক্রবর্তী লিখেছেন... ০৮ই জুন, ২০২৫
প্রথম কবিতাটি এত সুন্দর, ওটা পড়ার পর শেষ পর্যন্ত প্রতিটা ছড়া-কবিতাই পাঠকদের পড়তে হবে। ভারি চমৎকারভাবে কবিরা শ্রদ্ধা জানিয়েছেন আমার প্রিয় কবির উদ্দেশে। খুব ভালোলাগল।
অমিত চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন... ০৮ই জুন, ২০২৫
ছড়াগুলো খুব ভালো হয়েছে
অচিন্ত্য সুরাল লিখেছেন... ০৮ই জুন, ২০২৫
আপনার কবিতা ভালো লাগল । বিশেষ করে শেষটি অতি চমৎকার

আপনি কি এই লেখায় আপনার মন্তব্য দিতে চান? তাহলে নিচে প্রদেয় ফর্মটিতে আপনার নাম, ই-মেইল ও আপনার মন্তব্য লিখে আমাদের পাঠিয়ে দিন।
নাম
ই-মেইল
মন্তব্য

250

    keyboard_arrow_up