ছোটোদের চাঁদের হাসি / ছড়া - কবিতা / জুন ২০২৪

ছড়া-কবিতা

জৈষ্ঠ্যের ঝড়

আশিসকুমার মুখোপাধ্যায়

 

তির্-তির্ বয়ে যায় অজয়ের জল

তারই পাশে চুরুলিয়া, খনি অঞ্চল

এখানেই ফোটালেন কবিতার ফুল

দুখু মিয়া, অর্থাৎ কাজী নজরুল৷

 

কাজী নজরুল মানে বিদ্রোহী বীর

উচ্ছল প্রাণ আর উন্নত শির

মনে ছিল সাহস আর বুকে প্রত্যয়,

নজরুল-মানে-আর কিছু নয়, জয়৷

 

বেজে ওঠে বিউগল প্যারা-পাম্-পাম্

নজরুল হলো এক আগুনের নাম

সেই নামই মুছে দেয় বিভেদের ভুল,

আসলে যা ‘ভালোবাসা’, তা-ই নজরুল৷

 

জয়ের নিশান ওড়ে, হাতে মেলে হাত

মু্ছে যায় রাত, জাগে শুভ্র প্রভাত

প্রভাতের সে-আলোয় আগুনের স্রোত,

নজরুল মানে হলো চেতনা ও বোধ৷

 

নজরুল মানে সূর্যও বলা যায়

নাম শুনে যাঁর মেঘ ডমরু বাজায়

কেঁপে ওঠে মাটি, সেই মাটি বাঁধে ঘর

নজরুল মানে হলো জৈষ্ঠ্যের ঝড় !!

 

 

প্রখর তপন তাপে

অচিন্ত্য সুরাল

 

অসহ দ্বিপ্রহর

সহসা ঘূর্ণিঝড়

উড়ল বৃক্ষচূড়

ছুটছে তৃণাঙ্কুর

উথল প্রভঞ্জন

চকিতে মেঘস্বন

ঝটিতি নির্গমন

অযথা প্রবঞ্চন

বৃষ্টি এলো না হায়

কোথাও বৃষ্টি নাই !!

 

পৃথিবী হচ্ছে শেষ

দেখছি নির্ণিমেষ

এসেছে দুঃসময়

আগত বিপর্যয়

কেঁদেছে আর্তজন

বলছে ব্রাত্যজন

কাতর একটি শ্লোক

"এবারে বৃষ্টি হোক

এবার বৃষ্টি হোক"

সকলে বৃষ্টি চায়

তথাপি বৃষ্টি নাই !!

 

জীবন ধ্বংসপ্রায়

সকল সম্প্রদায়

বলে সমস্ত লোক

"এবারে বৃষ্টি হোক

আতুর বিশ্বলোক

হলে তা চূর্ণ হোক

তার আগে বৃষ্টি হোক

শেষের বৃষ্টি হোক

নতুন সৃষ্টি হোক

এবারে বৃষ্টি হোক

এখনই বৃষ্টি হোক” !!

 

 

নামতা

বিমলেন্দ্র চক্রবর্তী

 

দুই দ্বিগুণে চার

চার দ্বিগুণে আট

একলা ঘরে ভাল্লাগেনা

ডাকছে পূবের মাঠ ৷

 

তিন দ্বিগুণে ছয়

ছয় দ্বিগুণে বারো

এই গরমে স্বচ্ছ জলে

সাঁতার কাটতে পারো।

 

চার দ্বিগুণে আট

আট দ্বিগুণে ষোল

বন্ধ মনের জানলা কপাট

দু’হাত দিয়ে খোল৷

 

পাঁচ দ্বিগুণে দশ

দশ দ্বিগুণে বিশ

আমার জন্য এনো কিন্তু

দোয়েল পাখির শিস !!

 

 

খুশির জগৎ

কাজী মুরশিদুল আরেফিন

 

একটি শিশু রোদের ছোঁয়ায়

হাসছে ফুলের মতো,

আরেক শিশু হাঁটছে নিজেই

স্বপ্ন তারও কত।

 

বৃষ্টি ঝরায় জলের ফোঁটা

সবুজ চারা গাছে,

এই শিশুকে দেখেই খুশি

টুনটুনিটা নাচে।

 

আকাশ আলোয় ভরিয়ে রাখে

ছুটছে সাগর নদী,

পাহাড়টাকেও জয় করা যায়

ইচ্ছে থাকে যদি।

 

একটি শিশুর স্বপ্ন নিয়ে

যাচ্ছে পাখি উড়ে,

সবার আসন পাতা আছে

খুশির জগৎ জুড়ে।

 

 

দূষণ

মৃত্যুঞ্জয় দেবনাথ

 

ধোঁয়া-ধুলোয় আকাশ কালো

চতুর্দিকে তাই,

দু-চোখ খোঁজে সবুজ-শ্যামল

কোথায় তারে পাই?

 

দূষণ! দূষণ! দূষণ!

জল-স্থল-বাতাস-আলো

এই ধরণীর ভূষণ!

 

বৃক্ষচারা খুকুর হাতে

মাটিতে জল-সার–

দুটি চোখে স্বপ্ন-আঁকা

সবুজ-অঙ্গীকার!

 

 

নির্বোধ

টুম্পা মিত্র সরকার

 

যারা নানা অজুহাতে গাছ কাটে বনে,

আমি চাই তারা যাক দূরে নির্জনে৷

 

পাখিদের হল্লায় রেগে যায় খুব–

আমি জানি তারা সব দত্যির রূপ!

 

পাহাড়ের ঢালে যারা গড়ে জনপদ,

পশু মারবারই তারা নিয়েছে শপথ৷

 

বুদ্ধি তাদের নেই এতটুকু ঘটে।

থাকলে ঘুমোতো এই মহাসংকটে !!

 

 

 

 


পাঠকদের মন্তব্য

Tanuja Chakraborty লিখেছেন... ১৫ই জুন, ২০২৪
সবকটি কবিতাই খুব সুন্দর।
কণিকা দাস লিখেছেন... ২৫শে জুন, ২০২৪
খুব সুন্দর ছড়া ও কবিতা পড়লাম। পত্রিকার সম্পাদক মহাশয়াকে ধন্যবাদ। পত্রিকার সফট কপি পাঠানোর জন্য।
শঙ্খশুভ্র পাত্র লিখেছেন... ২৫শে জুন, ২০২৪
প্রতিটি ছড়া-ই সুনির্বাচিত৷ পড়ে খুশি হলাম৷ প্রিয় "চাদের হাসি"-কে ভালোবাসা জানাই৷
সুধাংশুরঞ্জন সাহা লিখেছেন... ০৫ই জুলাই, ২০২৪
ছড়াগুলো সব অসাধারণ । মন ছুঁয়ে গেল।

আপনি কি এই লেখায় আপনার মন্তব্য দিতে চান? তাহলে নিচে প্রদেয় ফর্মটিতে আপনার নাম, ই-মেইল ও আপনার মন্তব্য লিখে আমাদের পাঠিয়ে দিন।
নাম
ই-মেইল
মন্তব্য

250

    keyboard_arrow_up