ছড়া-কবিতা
শীতের মজা
কাজী মুরশিদুল আরেফিন
শীতের দিনে সাতসকালে
চুমুক খেজুর রসে,
সাইবেরিয়ার কুটুম পাখির
বিরাট মেলা বসে।
চড়ুইভাতি কোথায় হবে
বাসটা ছোটে টাকি,
সজনেখালির নদীর চরে
কুমির ঘুমোয় নাকি?
বনের ধারে হোগলাপাতার
সবুজ সামিয়ানা,
বাঘের গায়ে হলুদ কালো
পশমি চাদরখানা।
শীতের রোদে মহারাজা
হাঁটছে খুবই ধীরে,
দাদুর চোখে বাইনোকুলার
বাঘটা তাকায় ফিরে।
নলেন গুড়ের পিঠেপুলি
বাঘরা কোথায় পাবে?
জয়নগরের মোয়া আছে
কিন্তু সে কি খাবে?
বলল রিমি বাঘরা বোকা
খায় না পিঠে পুলি,
আয় না দীপু শীতে কাবু
বাঘের ছবি তুলি।
পুষির ছড়া
রফিকুর রশীদ
আমাদের এক বেড়াল ছিল
নাম ছিল তার পুষি
দুধভাত বা মাছের মুড়ো ---
খাবার পেলেই খুশি,
আমরা সবাই মিছিমিছি
তাকেই আবার দুষি।
শিকার কি আর রোজ পাওয়া যায়!
এটা-সেটা সব খাওয়া যায়!
শিকার বিনে বাদলা দিনে
উঠল হঠাৎ রুষি,
আমাদের সেই পুষি।
ব্যাপার কী ভাই ব্যাপার কী?
ঘটল এমন খ্যাপার কী?
দেয়াল জোড়া পোস্টারে এক বাঘ
চাইছে যেন সব কিছুরই ভাগ।
তাই না দেখে তখন থেকে
উঠছে রাগে ফুঁসি,
সেই আমাদের পুষি।
বেড়াল নাকি বাঘের মাসি
শুনেও ভারি পায় যে হাসি
বাঘমামা তো সুযোগ পেলেই
রক্ত খাবে চুষি ;
এই কথা খুব টের পেয়েছে
সেই আমাদের পুষি!!
রোদ্দুর
দীপঙ্কর বেরা
রোদ্দুর তুমি সকাল বেলায়
সরাও যত কালো
গাছের ফাঁকে মিষ্টি হেসে
মন করে দাও ভালো।
পূবের উষ্ণ পরশ পেয়ে
ফুলকলিরা ফোটে
ঘুম ভেঙে সব সবুজ পাতা
সতেজ হয়ে ওঠে।
দুয়ার খোলা আকাশ নীলে
রঙিন ফুলের মেলা
মিষ্টি বাতাস রোদ ঝলমল
ভ্রমর করে খেলা।
শিশির ঘাসে রামধনু তার
রঙিন ছবি আঁকে
রোদ্দুর তুমি থাকলে পাশে
মনটা সতেজ থাকে।
সকালবেলা
পাণ্ডু বিশ্বাস
উঠলো রবি ফুটল ছবি
রাতের শেষে ভোরে,
আকাশ হাসে, মেঘের পাশে
পাখিরা সব ওড়ে।
হাওয়ায় দোলে গাছের কোলে
রংবেরঙের পাতা।
বিছানা ফেলে দুচোখ মেলে
তুলছে খুকু মাথা।
বাইরে যেয়ে অবাক মেয়ে–
ভীষণ মিষ্টি ছবি।
হাসছে বাগান, রোদ্দুরে স্নান
করছে বুঝি সবই!
ঘাসের মাথা, গাছের পাতা,
পুকুর জলে ঝলক–
এত ভালো, মিষ্টি আলো,
আটকে রাখে পলক।
শান্ত ছবি, স্নিগ্ধ রবি
হিমের পরশ , তাইতো!
প্রকৃতি তাই রঙ বদলায়
খুশির ছোঁয়া পাইতো!!
বন্ধু আমার
দীপ রায়
বন্ধু আমার সুনীল আকাশ
বন্ধু মেঘের দল,
বন্ধু আমার শালুক ফোটা
কাজলা দীঘির জল।
বন্ধু আমার ভোরের পাখি
তেপান্তরের মাঠ,
বন্ধু আমার আলোয় ভরা
জোৎস্না মাখা রাত।
বন্ধু আমার ছোট্ট নদী
মাঠের সবুজ ধান,
বন্ধু আমার পথের বাউল
রাঙামাটির গান।
বন্ধু আমার ছবির খাতা
ছন্দ ছড়ার বই,
বন্ধু আমার শিমূল, পলাশ
একলা আমি নই।
চুপনগরের রূপকথা
দীপঙ্কর গোস্বামী
কেউ কি আছ, সঙ্গে যাবে?
ঘুমকে আগে তাড়াও;
আমার সঙ্গে তাল মিলিয়ে
পা-টি তোমার বাড়াও।
উঁহু, কথা কিচ্ছুটি নয়;
প্রশ্ন করাও বারণ;
চলবে নাকো মনে মনে
খোঁজার চেষ্টা কারণ।
তবেই ভোরে তাক লাগানো
আবছা আলোর মাঝে,
চুপনগরে তোমায় নিয়ে
যাব আমি কাজে।
কাজটি জেনো কঠিন বড়ো ,
রাজার মেয়ের ঘুম
ভাঙিয়ে দিতে হবে তবে
গোপনে বেমালুম!
ঘুম ভাঙলেই রাজকন্যা
ছড়িয়ে দেবে হাসি,
কলকলিয়ে বলবে কথা
তখন রাশি রাশি!
চুপনগরে রূপসাগরের
দরজা যাবে খুলে,
দেখবে তুমি ফেরার কথা–
যাবেই যাবে ভুলে!
পাঠকদের মন্তব্য
250