ছড়া-কবিতা
শ্রদ্ধাঞ্জলি
পদ্যটা জানে
কার্তিক ঘোষ
নদীটা এখন নদী নেই আর
যেন রোগা-ভোগা খাল...
উড়ো মেঘটাই কাল-
শহর ঘুরেছে বাসে,
ছড়াটা ফুটেছে কাশে।
তারপর-তারপর-
গল্পটা যেন খুঁজছে নদীর চর।
মনে পড়ে যায় মা-কে...
সত্যি বলতে ঘোমটা মাথায়
কে যেন ডাকছে কাকে!
বাবা কোথা গেল, ছেলেটা জানে না...
খুচরো ছিল কী গাঁটে...
ভিড় নেই কেন হাটে?
পাখিরা জানে না, গাছেরাও চুপ-
উড়ে গেছে সব বাসা...
মেঘে শুধু যাওয়া আসা!
কোথা যেন তবু ঘন্টা বাজছে
ফুটপাত বড় একা,
দুপুর গড়িয়ে বিকেলটা বুঝি
মায়ের পেল না দেখা!
না-ই দেখা হোক, পদ্য তোমাকে
দিলুম একটা বেলা...
পড়া-শুনো নেই-সত্যি বলছি,
ভালো লাগছে না খেলা!
তবুও কেমন বাবাকে তো নয়
মনে পড়ে যায় মাকে-
মা-ও কী আমার পদ্যর মতো
একা একা জেগে থাকে?
কিছু বলছে না টুপু...
নাই সে বলুক,
পদ্যটা জানে জেগে আছে চুপুচুপু।।
***প্রয়াত কার্তিক ঘোষের লেখা এই ছড়াটি ছোটোদের চাঁদের হাসি ২০২১ বার্ষিক সংখ্যায় প্রকাশিত।
অহংকার
ভবেশ দাশ
ছড়ার আবেগে দুরন্ত বেগে কলম যাঁর
লাগাতে পেরেছে ছন্দে ধ্বনিতে ধুন্ধুমার,
যত পড়ে চলি তত নেমে যায় মনের ভার
ঝর্নার মতো ছড়া ঝরে পড়ে বল তো কার?
তিনি আমাদের ভবানীপ্রসাদ মজুমদার।
তাঁর ছড়া দিয়ে ঘর বেঁধে থাকি, একলা নয়,
সবাই মজেছি তাই তো আমরা ভবানীময়,
একবার নয়, কেন যে টানেন বারংবার
ছড়ার জগতে তিনি আমাদের অহংকার।
নিরহং এক শিল্পী ভবানী মজুমদার।
ছড়ার অমন প্রাসাদে কত যে চিকন কাজ
ভাবে ভাবনায় রূপে ও অরূপে বাহারী সাজ,
খুলে দিয়েছেন সেই প্রাসাদের সিংহদ্বার
সোনার ছড়ায় মুড়ে রাখা যেন কলম তাঁর।
প্রিয় ছড়াকার ভবানীপ্রসাদ মজুমদার।
ছড়া-কবিতা
কালবোশেখী
ছন্দা চট্টোপাধ্যায়
হুড়মুড়িয়ে আসছে ছুটে কালোমেঘের দল
এক্ষুনি চোখ ধাঁধিয়ে দেবে
ঝাপটা দিয়ে উড়িয়ে নেবে
একটুপরে আম কুড়োব দুকান চেপে চল।
বৃষ্টি নামার আগেই দাঁড়াই ঠাকুর - দালানে
জ্বর বাধালেই বন্দী ঘরে
জুটবে বকা,ওষুধ পরে
একটু নাহয় হলোই দেরি ঘুরব বাগানে।
বৃষ্টি এসে জুড়িয়ে দেবে সূয্যিমামার রাগ
মেঘভাঙা রোদ ঝিকমিকিয়ে
গাছগাছালির মন ভরিয়ে
ছড়িয়ে দেবে ভিজে মাটির তৃপ্ত অনুরাগ ।।
বর্ষবরণ
কাজী মুরশিদুল আরেফিন
এই যে মশাই আসুন বসুন
পাখার বাতাস খান,
আজকে নতুন বছর শুরু
শুনুন কবির গান।
তালের পাতার নকশি-পাখা
দেখতে কি আর পান?
কই রে হীরু মিষ্টি পানের
ডিব্বাখানা আন।
ধুতির ওপর পাঞ্জাবিটা
লাগছে চমৎকার,
পকেট ঘড়ি দাদুর নাকি
যায় না দেখা আর।
ক্যালেন্ডারে বাংলা তারিখ
লগ্ন তিথি চাই?
পঞ্জিকাতে পাবেন সবই
এটাও দিলাম তাই।
বোশেখের রঙ
সুব্রত চৌধুরী
বোশেখের রঙ মাখবো গায়ে তাই চড়েছি রথে
খুশির ডালা সাথে নিয়ে ঘুরছি পথে পথে,
সাগর- নীলে নিলাম তুলে অল্প কিছু নীল
জ্যোৎস্না দিল রুপোলি রঙ বাহারি ঝিলমিল।
মাঠে-বনে গাছ-গাছালির সবুজ নিলাম কিছু
নানান -রংয়ের আশায় নিলাম ময়ূরপংখীর পিছু,
জবা ফুলের পাপড়ি হলুদ নিলাম কিছু হাতে
কালো রংয়ের খোঁজে গেলাম অমাবস্যার রাতে।
ইন্দ্রধনুর সাতখানা রঙ নিলাম আমি চেয়ে
কৃষ্ণচূড়ার লালটি নিলাম গাছের ডাল বেয়ে।
খুশির রঙে মেতেছে সব ঘুরছে দলে দলে,
বোশেখ রঙে মনের কালো যাক না দূরে চলে।
ছড়া
উৎপলকুমার ধারা
ছড়া-রা ছন্দে ছুটুক
দিক ঢেলে আনন্দ সুখ
নির্ভয়ে ফুল-রা ফুটুক
যতো খুশি উজলে উঠুক !
ছড়া-রা স্বপ্ন ছড়াক
বিদ্বেষ দূর হয়ে যাক্
সত্যিটা সামনে দাঁড়াক
সব্বাই স্বস্তি-টা পাক !
ছড়া-রা ছন্দ ঝরাক
বাজুক ওই বাংলার ঢাক
তাককুড়-তাককুড়-তাক
সব্বাই থাক ভালো থাক !!
পাঠকদের মন্তব্য
250