স্মরণে বরণে স্বাধীনতা দিবস
বর্ষা এলেই শ্রাবণ-মেঘের চঞ্চলতা
বৃষ্টিধারায় শান্ত নদী খরস্রোতা !!
সবুজ পাতার কোলে ফুলের খুশির নাচন
সিক্ত বাতাস জুড়িয়ে দেয় শরীর ও মন !!
১৯৪৭ সালের এই দিনেই ভারত ব্রিটিশ শাসনের হাত থেকে মুক্ত হয়ে একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। তাই ১৫ই আগস্ট শুধু একটি তারিখ নয়, এটি দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করা অগণিত শহীদ ও সংগ্রামী মানুষের ত্যাগ ও বীরত্বের প্রতীক। তোমরা নিশ্চয়ই জানো, এই দিনটিতে দেশজুড়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বক্তৃতা ও প্রভাত ফেরির আয়োজন করা হয়।
দেশের প্রধানমন্ত্রী দিল্লির লালকেল্লা থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন এবং জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। স্কুল, কলেজ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও দিনটি নানা উৎসাহ ও গর্বের সঙ্গে পালন করা হয়। তোমাদের প্রত্যেকের স্কুলেও নিশ্চয়ই উদযাপিত হয় স্বাধীনতা দিবস। এই দিন আমাদের মনে করিয়ে দেয় দেশের জন্য দায়িত্ব, নাগরিক সচেতনতা ও ঐক্যের গুরুত্ব। এটি শুধু অতীতের স্মরণ নয়, বর্তমানকে গড়ে তোলার এবং ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়ার এক আহ্বান। আমাদের সকলকেই সেই আহ্বানে সাড়া দিতে হবে।
১৫ই আগস্ট হলো এক প্রবাদপ্রতিম ভারতবাসীর জন্মদিন। ১৮৭২ খ্রিষ্টাব্দে এই দিনেই জন্মগ্রহণ করেন ঋষি অরবিন্দ। ভারতীয় দার্শনিক, যোগী, কবি ও জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের অন্যতম নেতা ইনি। তিনি ছিলেন বিখ্যাত ‘বন্দে মাতরম’ পত্রিকার সম্পাদক। ১৯১০ সাল পর্যন্ত অরবিন্দ ছিলেন স্বাধীনতা আন্দোলনের এক প্রভাবশালী নেতা। তারপর তিনি আধ্যাত্মিক বিবর্তনের ক্ষেত্রে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির কথা প্রচার করেন। ১৯৫০ সালের ৫ই ডিসেম্বর প্রয়াত হন ঋষি অরবিন্দ।
সুকান্ত ভট্টাচার্য বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি ছিলেন বিংশ শতাব্দীর একজন প্রতিভাবান তরুণ কবি, যিনি খুব অল্প সময়ের মধ্যে বাংলা কাব্য জগতে নিজের এক বিশেষ স্থান তৈরি করে গিয়েছিলেন। জন্ম ১৯২৬ সালের ১৫ আগস্ট। মাত্র ২১ বছর বয়সে, ১৯৪৭ সালের ১৩ মে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। সুকান্তের কবিতায় ছিল সংগ্রামের অগ্নিশিখা, শ্রমজীবী মানুষের প্রতি ভালোবাসা এবং সমাজের অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ।
সুকান্তর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ ‘ছাড়পত্র’ তাঁর কবিতার গভীরতা ও প্রগাঢ় চিন্তাধারার পরিচয় বহন করে। তাঁর লেখা ‘খিদের কবিতা’, ‘আঠারো বছর বয়স’, ‘চাষার ছেলেকে’ প্রভৃতি কবিতা আজও পাঠকের হৃদয় স্পর্শ করে। শুধু বড়দের জন্য নয়, ছোটোদের জন্যও লিখেছেন সুকান্ত এবং কিছু গানও রচনা করেছেন তিনি। সুকান্তের কবিতা শুধু সাহিত্য নয়, তা সমাজ, রাজনীতি ও মানুষের অনুভবের দলিল।
নিজের দেশকে ভালোবাসা এবং ভালো রাখার দায়িত্ব সমস্ত দেশবাসীর। তারজন্য ছোটোবেলা থেকেই দায়িত্ব বোধের শিক্ষা এবং দীক্ষা প্রয়োজন। ভালো থেকো সবাই।
ছবি ঋণ ইন্টারনেট
পাঠকদের মন্তব্য
250