ছোটোদের চাঁদের হাসি / ছড়া - কবিতা / সেপ্টেম্বর ২০২৪

ছড়া-কবিতা

ভালো থাকো

অপূর্বকুমার কুন্ডু

 

ভালো থাকো তুমি ভোরের আকাশ, আর নদী বহমান।

ভালো থাকো ফোটা ফুলে ফুলে ভরা নতুন দিনের গান।

ভালো থাকো তুমি ভোরের বাতাস বকুল গন্ধ ঘিরে,

ভালো রাখো তুমি প্রথম প্রভাত আলোর স্বপ্নটিরে।

 

ভালো থাকো নব আনন্দে জাগার অমোঘ সুর,

ভালো থাকো তুমি পাখির কন্ঠে ঘুম ভাঙানোর সুর।

পাশে থাকো তুমি উড়ে যাওয়া মেঘ,কোন সুদুরের ডাক,

ভালো থাকো তুমি সাহস জাগানো সরাতে দুর্বিপাক।

 

ভালো থাকো তুমি কন্ঠে কন্ঠে নব জীবনের গান,

ভালো থাকো তুমি রবির আলোয় আঁধারের অবসান।

ভালো থাকো তুমি ভয় হতে যেন অভয় মন্ত্র পাই,

সকলেই যেন ভালো থাকে আজ, এটুকুই শুধু চাই।

 

 

ঘুড়ির আকাশ

কাজী মুরশিদুল আরেফিন

 

ওই যে দূরে নীল আকাশে

উড়ছে কত ঘুড়ি,

ইচ্ছে করে ঘুড়ির লেজে

এই চিঠিটা জুড়ি।

 

একটা ঘুড়ি হলুদ-লালের

একটা সাদা কালো,

আরেক ঘুড়ি সবুজ-মেরুন

দেখতে সবই ভালো।

 

একটা ঘুড়ি চিলের মতো

হঠাৎ দিল হানা,

ড্রাগনটাকে বলছে ইভান

ওই দিকেতে যা না।

 

একটা ঘুড়ি গোঁত্তা মারে

বিমান হানার মতো,

একটা ঘুড়ি দেশ পাহারা

দিচ্ছে অবিরত।

 

মিমোর ঘুড়ি হালকা সবুজ

উড়ছে ডানা মেলে,

ড্রাগনটাকে ভো-কাট্টা

করবে সুযোগ পেলে।

 

ইচ্ছে রিমির, একটা ঘুড়ি

পাঠিয়ে দেবে চাঁদে,

বললো মামা ওড়াও তবে

বিপদ ন্যাড়া ছাদে।

 

 

শাকবুড়ি

অচিন্ত্য সুরাল

 

বাজারের এককোণে বাসি ভিটামিন

আগলিয়ে ব’সে থাকে প্রায় প্রতিদিন।

 

হিংচে ও গিমাশাক, কলমির গোছা,

একপাশে সজিনার গোটাকয় পালা

জলের শুষনি কিছু আর কুলেখাড়া,

      সকালে সাজায় বসে পসরার ডালা।

 

ঘোলাটে দু’চোখ তার, অসহায় মুখ

কোঁকড়ানো গাল দু’টি, চিবুক কপাল

আহা তার ছেঁড়া ছেঁড়া পরনের শাড়ি

         গলার স্বরও ঠিক তেমনিই বেহাল।

 

ঢাকুরিয়া পুরুলিয়া বাঁকুড়ার হাটে

কল্যাণী বেলডাঙা আর বারাসাতে।

 

মন বলে, “চলো হাটে, করি ঘোরাঘুরি”

দেখি সে বসেই আছে বেলা পার ক’রে।

লেটুস বা পালং-এর গৌরবহীন–

             সকালের চিরচেনা একই শাকবুড়ি।

 

 

স্মৃতির ঘরে

তনুজা চক্রবর্তী

  

শরৎ এলে শারদা আসে

         পায়না আমের ভাগ,

কে জানে কেন বলে না কিছু

          দেখায় না সে রাগ !

 

বেজায় খুশি পদ্ম নিয়ে

          শিউলি ঝরা হাসি,

অপরাজিতার মালা পরে

           বলে ভালোবাসি।

 

হয়তো কাঁদে লুকিয়ে একা

             আঁচলে মুখ ঢেকে,

কত কিছুই ফেলে গেছে

             বাপের বাড়ি থেকে।

 

তাই কি সে মর্তে ফেরে

           মেঘের ভেলায় চড়ে,

ছেড়ে যা গেছে কতটা আছে

            স্মৃতির ঘরে পড়ে !!

 

 

শরতের ছবি

রবিন কুমার দাস 

 

একটা সময় সব ছিল

নদীর পাড়ে ঘর ছিল,

নদীর যেমন প্রাণ ছিল

ভীষণ উদার মন ছিল।

 

ছলাৎ ছলাৎ ঢেউ ছিল

জোয়ার-ভাটার টান ছিল,

সকাল-সন্ধে গান ছিল

সবুজ শ্যামল মাঠ ছিল।

 

নতুন ধানের ঘ্রাণ ছিল

ভাত খেতে কী স্বাদ ছিল,

নদীর জলে চাষ ছিল

পুকুরভরা মাছ ছিল।

 

আষাঢ়-শ্রাবণ যাচ্ছে

সুনীল আকাশ হাসছে

শিশু-কিশোর খেলছে

কারণ শরৎ আসছে।

 

শিউলি-টগর ফুটছে

কাশফুলে মাঠ ঢাকছে

আনন্দে সব ভাসছে

দুগ্গাঠাকুর আসছে।

  

 

বিকেলগুলো

পান্ডু বিশ্বাস

 

পাড়ায় পাড়ায় বিকেলগুলো

মাঠ জুড়ে সব উড়িয়ে ধুলো

 

খেলতো তারা সেই অতীতে,

ছুটছে তারা কোন গতিতে!

 

পাইনা তাদের কোথাও খুঁজে,

কোথায় তারা মাথা গুঁজে?

 

অতীত ছবি হারিয়ে গেছে

বর্তমানের গতির কাছে।

 

সেই যে মিঠে গল্প বলা,

দল বেঁধে সব খেলতে চলা,

 

পাড়ার মাঠে, পুকুর ঘাটে

ইচ্ছে  মতন সময় কাটে৷

 

কোথায় তারা হারালো আজ?

তাদের খোঁজা জরুরি কাজ !!

 

 

 


পাঠকদের মন্তব্য

নীতীশ বসু লিখেছেন... ০৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪
প্রত্যেকের কবিতাই আমার কাছে ভালো লেগেছে । সবাইকে ধন্যবাদ জানাই ।
পার্থপ্রতিম আচার্য লিখেছেন... ০৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪
সুপরিকল্পিত উদ্যোগ। অত্যন্ত ভালো লাগে পড়তে।
Sonali Das লিখেছেন... ০৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Bachchder jonnyo mon lhudi Lora kobita ..pujor somoi abriti korley khub bhalo lagbey
মৃতু্ঞ্জয় দেবনাথ লিখেছেন... ০৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪
প্রতিটি কবিতাই স্বতন্ত্র। সুন্দর। ????
পীযূষ কান্তি সরকার লিখেছেন... ০৯ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪
ছড়াগুলো ছোটোদের মনভোলানো, বড়দের টেনে নিয়ে যায় স্মৃতির পাতায়।
RABIN KUMAR DAS, লিখেছেন... ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪
অপূর্ব ও নান্দনিক। কিন্তু ডিজিটাল না হয়ে প্রিন্টেড হলে অনেকে দিন ঘরে সাজানো থাকতো। ধন্যবাদ রইলো আপনাদের সম্পাদক মন্ডলিকে।

আপনি কি এই লেখায় আপনার মন্তব্য দিতে চান? তাহলে নিচে প্রদেয় ফর্মটিতে আপনার নাম, ই-মেইল ও আপনার মন্তব্য লিখে আমাদের পাঠিয়ে দিন।
নাম
ই-মেইল
মন্তব্য

250

    keyboard_arrow_up