ছোটোদের চাঁদের হাসি / ছড়া - কবিতা / জুলাই ২০২৫

ছড়া-কবিতা

 

রথের মেলায়

কাজী মুরশিদুল আরেফিন

 

রথের রশি টানছে সবাই

ওই বসেছে মেলা,

পথের সাথে পথ মিশেছে

খুশির বিকেল বেলা।

 

রিমির কাকু মাহেশ গেছে

মহিষাদলে দাদু,

সবখানেতে পাঁপড় আছে

জিলিপি সুস্বাদু।

 

বেড়াচাঁপার পথের ধারে

কাঁঠাল রকমারি,

অবাক-করা কদমা বিরাট

একটা নিতেই পারি।

 

রথের মেলায় কিনছে রিমি

পলাশ ফুলের চারা,

শরৎবাবুর রাধারাণী—

কোথায় গেল তারা?

 

রথ চলেছে গড়গড়িয়ে

যাচ্ছে অনেক দূরে,

ছোট্ট দীপু বাজায় ভেঁপু

মেলায় ঘুরে ঘুরে।

 

রথের চাকা পুরীর পথে

বৃষ্টি ঝিরি ঝিরি,

উল্টোরথেও বসবে মেলা

এখন বাড়ি ফিরি।

 

 

 

টাপুর টুপুর

তুহিন কুমার চন্দ

 

জল টলটল কচুর পাতায় আকাশ ভেজা জল,

ছাই কুড়নো খড়ের গাদায় খুশির কোলাহল

টাপুরটুপুর বৃষ্টি নামে শুকনো নদীর কূলে,

আকাশ কোথায় হারিয়ে গেছে হাস্নাহানার ফুলে।

 

গন্ধরাজের গন্ধে মাতাল রাতচরা সব পাখি,

আঁধার আকাশ মেঘ ভেঙেছে শুকনো মাটির রাখী।

তাল ঝমাঝম তালের পাতায় বৃষ্টি নামে জোরে,

ভিজছে শালিক টুনির ছানা রাত ফুরনো ভোরে।

 

কচুর বনে শাপলা শালুক  ভালুকডিহির গ্রামে,

রোদ চলে যায়, মেঘলা আকাশ,বৃষ্টি তখন নামে।

 

  

 

গাঁয়ের ছবি

শংকর দেবনাথ

 

খাতার পাতায় আপন রঙে রং-পেন্সিল ঘষে,

আঁকছে খোকা গাঁয়ের ছবি মায়ের পাশে বসে ।

ঘর এঁকেছে পরপর দুই তিনটি সারি সারি,

গাছ এঁসেছে পাঁচটি ছ’টি মধ্যে মাঝে তারই।

 

আঁকলো নদী রাখলো বেঁধে নৌকো বেঁধে গাছে-

মাঠ আঁকে যার মধ্যে চাষার বলদ দু’টি আছে।

জালের মত আলপথও সে ক্ষেতের মাঝে আঁকে-

সোহাগ ভরে কৃষক বধু ধান গাছে হাত রাখে!

 

গাঁয়ের পথে ভায়ের সাথে বোন যায় ইস্কুলে

কাঁখে ঝুড়ি যাচ্ছে বুড়ি এক মনে শাক তুলে।

দিগন্তে যেই রঙ ছড়িয়ে আঁকলো খোকা রবি,

সজীব হয়ে অমনি হেসে ফুটলো গাঁয়ের ছবি।!

 

 

 

শালিক চড়ুই

রাজর্ষি মন্ডল

 

শালিক চড়ুই আয় রে পাখি

খেলবে পাপাই সোনা

খেতে দেব মুগ কড়াই আর

জামা উলের বোনা।

 

আম আমরুল পেয়ারা দেব

দেব পেঁপে কলা

সন্ধাবেলায় হরিবাসর

দেব ভাজা ছোলা।

 

থাকবি আমার নিমের ডালে

কিচির মিচির করে

গান শোনাবি তখন তখন

পাপাই যখন ঘরে।

 

আকাশ ঘিরে উড়বি তোরা

ভোরের আলো মেখে

উঠবে পাপাই রোজ সকালে

তোদের দেখে দেখে।

 

পাপাই আমার লক্ষীসোনা

বাসবে তোদের ভালো

আমার পাপাই হাঁটবে পা পা

মুছবে আধার কালো।

 

 

 

গরম বিক্রি আছে

অমিত চট্টোপাধ্যায়

 

এত্ত গরম চাই না তবু

পাচ্ছি দেখি অনেক বেশি!

সূর্য এসে দিচ্ছে ধমক

ফুলিয়ে কড়া রোদের পেশি!

 

ঘামের নদী দরদরিয়ে

গা পেরিয়ে নামছে পায়ে,

মাথার ঘিলু রোদের তাপে

ঘুরছে শুধু ডাইনে বাঁয়ে!

 

বাড়তি এমন তাপের পারা

বিক্রি করার সুযোগ পেলে,

বরফ ঢাকা দেশের দিকে

গরম বাতাস দিতাম ঠেলে।

 

শীতকাতুরে দেশে দেশে

তাই তো রোজই করছি প্রচার,

গরম কিনুন সস্তা দরে

এমন সুযোগ মিলবে না আর।

 

 

 

খোকা-খুকি

স্বপন কুমার রায়

 

খোকা,

তোমার জন্য আজ ধরেছি

একশো জোনাক পোকা।

 

দেখবে এসো কাছে

মিট-মিটিয়ে দিচ্ছে আলো

রাতের টগর গাছে!

 

খুকি,

তোমার জন্য সাদা খাতায়

কাটছি আঁকিবুকি।

 

নয় সে  কথা ভুল

দেখবে এসো আঁকিবুকি

এখন রঙিন ফুল!

 

মেঘ আকাশে উড়িয়ে আলো

খোকা-খুকি এসে,

স্বপ্নগুলো কুড়িয়ে নিয়ে

চলল ভেসে ভেসে!


পাঠকদের মন্তব্য

Deep Ray লিখেছেন... ১৩ই জুলাই, ২০২৫
সব ছড়া গুলো খুব সুন্দর
তনুজা চক্রবর্তী লিখেছেন... ১৪ই জুলাই, ২০২৫
প্রতিটা ছড়াই খুব সুন্দর। রথের মেলা, গ্রামের ছবি ছোটোবেলার কথা মনে করিয়ে দিল।

আপনি কি এই লেখায় আপনার মন্তব্য দিতে চান? তাহলে নিচে প্রদেয় ফর্মটিতে আপনার নাম, ই-মেইল ও আপনার মন্তব্য লিখে আমাদের পাঠিয়ে দিন।
নাম
ই-মেইল
মন্তব্য

250

    keyboard_arrow_up