ছোটোদের চাঁদের হাসি / ছড়া - কবিতা / জানুয়ারি ২০২৫

ছড়া-কবিতা

বইকাকু

কাজী মুরশিদুল আরেফিন

 

বইকাকু নামে তাকে

সকলেই চেনে,

জামা নয় জমি নয়

শুধু বই কেনে।

 

মাইনের টাকা পেয়ে

ছোটে বইমেলা,

এ ব্যাপারে করে না যে

কোনো হেলাফেলা।

 

ছড়া  ছবি কবিতার

বইয়ের সাথে

মজাদার গল্পের

বই তার হাতে।

 

জানা তার অজানার

বই কত শত,

ট্রেনে বাসে ঘরে বসে

পড়াটাই ব্রত।

 

দিন গোনে এপাড়ার

সব ছেলে মেয়ে,

ওরা খুব খুশি হয়

বই হাতে পেয়ে।

 

খুব মজা বইয়ের

দেশটাতে ঘোরা,

কাকু বলে মেলা শুরু

চল দেখি তোরা।

 

 

শীত

শ্যামাচরণ কর্মকার

 

শীত কুয়াশার কথা বলে

শীত বরফ ছোঁয়ায় জলে।

শীত ঝরায় গাছের পাতা

শীত হিমেতে ভরায়  মাথা।

 

শীত ঝিরঝির হিম ছড়ায়

শীত শরীরে কাঁপন ধরায়।

শীত উত্তুরে হাওয়া আঁকে

শীত কাঁপায় শহর-গাঁকে।

 

শীত দেয় মিঠে রোদ্দুর

শীত আনে যে নলেন গুড়।

শীত শোনায় পিঠের গান

শীত দোলায় সবার প্রাণ।

 

শীত ছড়ায় ফুলের বাহার

শীত বরফে সাজায় পাহাড়।

শীত বসায় বইয়ের মেলা।

শীত ভাসায় খুশির ভেলা

 

শীত কত ছবি যায় এঁকে

শীত ঘুম থেকে তোলে ডেকে।

শীত দেয় বেড়ানোর ডাক।

শীত মনপ্রাণ জুড়ে থাক।

 

 

ঝরা পাতার গীত

সুব্রত চৌধুরী

 

টুপ টুপা টুপ ঘাসের ডগায়

জমায় শিশির হাট,

চিক চিকা চিক রূপোর ঝিলিক

যায় ছেয়ে যায় মাঠ।

আনে বয়ে উত্তরী বাও

হাড় কাঁপানো শীত,

জাগায় ব্যথা হৃদের মাঝে

ঝরা পাতার গীত।

পড়ে গেছে বনে বনে

রং বদলের  ধুম,

হিমের ভাবে নকশী কাঁথায়

খোঁজে সবাই উম।

গরম গরম খেজুর রসে

মেলে অপার সুখ,

নলেন গুড়ের পায়েস খেয়ে

রংগীন সবার মুখ।

 

 

 হ্যাপি নিউ ইয়ার

দীপঙ্কর গোস্বামী

 

ক্রিসমাস ইভ শেষে যাস্ না রে মুষড়ে ;

রাত গেলে হবে ভোর, ভেবে থাক খুশ রে।

তবু যদি মনে হয়– করি কী? করি কী?

তবে বলি, ঘরেতে আছে বড় ঘড়ি কি?

দেয়ালে তা থাকলেই বসে পড় সামনে,

দেখে যা ঘণ্টার দোলনটা সমানে।

রাত বারোটার আগে হাসিখুশি করে মন,

বাজে কিনা ঘন্টাটা কানখাড়া করে শোন।

ঢং ঢং বাজলেই চেঁচিয়ে ওঠ জোর,

আনন্দে মেতে উঠে শুরু কর নাচ তোর।

নাচতে নাচতে ঠিক এসে যাবে ভোরটা,

সেই ভোরে খুলে যাবে নতুনের দোরটা।

আলোছায়া আকাশে শুকতারা আর চাঁদ,

ঘোর তোর কাটাবে নতুনের সংবাদ।

টি টি টি টি ডাক শুনে বুঝবি টিয়ার–

খুশিতে বলছে যেন, ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’!

 

  

স্বপ্ন দেখি নতুন বছর

শঙ্কর দেবনাথ

 

স্বপ্ন দেখি নতুন বছর

নতুন হয়ে আসুক,

দুঃখ ভুলে পরান খুলে

সবাই নাচুক হাসুক।

 

স্বপ্ন দেখি-ধর্ম নিয়ে

বিভেদ-লড়াই থামুক,

এই পৃথিবীর কোণায় কোণায়

স্বর্গীয় সুখ নামুক।

 

মানবতার ধর্ম মেনে

কর্মে সবাই লাগুক,

নতুন বোধের আশার আলোয়

সোনালি ভোর জাগুক ।

 

দুর্নীতি নয়, ন্যায়-নীতিতে

সকল মানুষ চলুক,

ভয়-ভীতিহীন প্রেম-প্রীতিতে

সবাই কথা বলুক।

 

 

শীতের দিনে

দীপ রায়

 

শিরশিরানি হিমেল হাওয়া

মাঠে ঘাটে বইছে,

হলুদ পাতা ফিসফিসিয়ে

কী সব কথা কইছে।

 

আলসেমি রোদ হিম চাদরে

মুখখানা তার ঢাকছে,

একলা বসে ভোরের পাখি

হিমের কণা মাখছে।

 

ঠক ঠকা ঠক হাড় কাঁপুনি

ছেলে বুড়ো কাঁপছে

লেপ সোয়েটার টুপি মাফলার

মাথায় গায়ে চাপছে।

 

বাগান জুড়ে গোলাপ গাঁদা

খিলখিলিয়ে হাসছে,

ঘরের থেকে পিঠে পুলির

গন্ধ ভেসে আসছে।

 

কেউ বা গেছে বইমেলাতে

কেউ বা টুরে যাচ্ছে,

চড়ুইভাতির আনন্দেতে

মনখানা আজ নাচছে।

  


পাঠকদের মন্তব্য

মঞ্জিলা চক্রবর্তী লিখেছেন... ১২ই জানুয়ারি, ২০২৫
প্রতিটি ছড়াই অনবদ্য!

আপনি কি এই লেখায় আপনার মন্তব্য দিতে চান? তাহলে নিচে প্রদেয় ফর্মটিতে আপনার নাম, ই-মেইল ও আপনার মন্তব্য লিখে আমাদের পাঠিয়ে দিন।
নাম
ই-মেইল
মন্তব্য

250

    keyboard_arrow_up