ছড়া-কবিতা
শ্রদ্ধায় স্মরণে সুকান্ত
সুজিত কুমার সরকার
পূর্নিমার চাঁদকে যিনি
ঝলসানো এক রুটির সঙ্গে
করেছিলেন তুলনা !
যক্ষারোগে অকালমৃত
সেই কবিকে তোমরা যেন
কোনদিনও ভুলোনা।
হয়তো
অশোককুমার মিত্র
হয়তো কোন জাদুই আছে
তাইতে,
রাত আকাশের তারার খেলা
যায় ফুরিয়ে সকালবেলা,
ঘুম-ভাঙা চোখ চাইতে
না চাইতে।
হয়তো কোন জাদুই আছে
তাইতে,
এইতো প্রবল বৃষ্টি শেষে
রামধনুটা উঠল ভেসে
আকাশ পানে চাইতে
না চাইতে।
হয়তো কোন জাদুই আছে
তাইতো,
যখন দেশে বিপদ নামে
রুখতে তারে শহর গ্রামে
বিবাদ ভুলে একজোট
সব্বাই তো?
তাই তো!
মুখচোরা
সুখেন্দু মজুমদার
দিনভর খুঁজি দেখা পাই যদি
ছিটেফোঁটা হয় হোক,
রাত নামলেই এসে কেন ওরা
জুড়ে থাকে দুই চোখI
স্বপ্নের কথা শুনবে কি কেউ
হাতে কি সময় আছে,
যে যার মতন কাজে ডুবে আছে
যাই বল কার কাছে!
স্বপ্নরা বুঝি মুখচোরা খুব
নিচু স্বরে গান গায়,
গনগনে রোদে পথ ভুলে এসে
চোখ থেকে সরে যায়।
তারার আলোয় ফিরে এসে ওরা
শুরু করে ডাকাডাকি,
ইশারায় বলে, ঘুমের পাড়ায়
আমরাই জেগে থাকি।
হরিণছানা
নীহাররঞ্জন সেনগুপ্ত
বনের ধারেই হরিণছানার ঘর ছিল,
চালায় তাদের নতুন-ধানের খড় ছিল,
খেলার ছলে সেই চালাতে মারলে টান,
সঙ্গে সঙ্গে বাবার হাতের চড় ছিল।
ছানার আবার সবেতে ধড়ফড় ছিল,
মায়ের সঙ্গে চরতে যাবার তর ছিল ?
এদিকে চার-পাঁচটা গাঁয়ের জানতো সব,
বনের কেঁদো-বাঘটা কী বর্বর ছিল !
এক বিকেলে পাতাতে মর্মর ছিল,
নদীর ঢালেই ছোট্ট বালির চর ছিল,
খেলতে গিয়ে হরিণ গেল পথ ভুলে,
যাক্, সেখানেই এক ভালো সম্বর ছিল।
পথ ভুলে তো ছানার মনে ঝড় ছিল,
সম্বরেরই ওপরে নির্ভর ছিল,
তার সঙ্গেই ফিরতে পেরে খুব খুশি,
কপালে তার বনদেবীর বর ছিল৷
বায়না
তনুজা চক্রবর্তী
একফালি নয় এক থালা চাই
বায়নার নেই জুড়ি,
ঢাকবেনা কেউ চাঁদটাকে আর
ওড়াবে না চুল বুড়ি।
আঁকবে না মেঘ আকাশের গায়
নিরুদ্দেশের ছবি,
বসবে না পাটে ফিরবেনা ঘরে
সহজপাঠের রবি।
ঝরবে না ফুল চেনা আঙিনায়
গাইবে না গান পাখি,
শত দুঃখেও ভরবে না জলে
কোনোদিন কারও আঁখি।
গড়গড় করে বলেছিল যা যা
কেবল কথার ছলে,
অবুঝের ঠোঁটে কাঁচামিঠে জেদ
শৈশব কথা বলে।
বাবুই পাখির বাসা
জগদীশ মন্ডল
বাগানবাড়ির দখিণ দিকে
তাল গাছে বেশ খাসা,
উপরে মোটা নীচে সরু
বাবুই পাখির বাসা।
সকাল হলে কিচিরমিচির
পাতার উপর নাচে,
হাওয়ার তালে চারটি বাসা
দোদুল দোলে গাছে।
লতাপাতায় সাজিয়ে
বাঁধে দু’কুঠরি ঘর,
সবাই জানে শিল্পী বাবুই
দক্ষ কারিগর!
কিন্তু সেদিন হঠাৎ
এল কালবোশেখি ঝড়,
দুটি বাসা উড়ে গেল
আর দুটো নড়বড়।
ঝড় থেমে যায় ছোট্টো বাবুই
টিটির টিটির ডাকে,
কেঁদে কেঁদে বলছে যেন
দাও খুঁজে দাও মাকে।
পাঠকদের মন্তব্য
250